

খেলাধুলা করা আমদের সকলেরই খুবই পছন্দের। শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার অন্যতম একটি মাধ্যম এটি। আমরা সাধারণত ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার দেয়া, ইত্যাদি ধরনের খেলা করে থাকি। তবে পৃথিবীতে এমন সব উদ্ভট খেলা আছে যেগুলা আমাদের দেশের মানুষ […]
খেলাধুলা করা আমদের সকলেরই খুবই পছন্দের। শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার অন্যতম একটি মাধ্যম এটি। আমরা সাধারণত ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন, সাঁতার দেয়া, ইত্যাদি ধরনের খেলা করে থাকি। তবে পৃথিবীতে এমন সব উদ্ভট খেলা আছে যেগুলা আমাদের দেশের মানুষ পাগলামি বলে থাকে। যেমন বড় কোনো পাহার বা বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে তারপর প্যারাসুট ব্যাবহার করে মাটিতে নামা। বড় বড় ষাঁড়ের পীঠে বসে লাফালাফি করা আরও অনেক। আজকে আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব ঠিক তেমনি কিছু পাগলামি মার্কা বা উদ্ভট খেলাকে যা আমাদের দেশের মানুষ কল্পনাও করেনা।
প্রথমে শুরু করি বেস জাম্পিং দিয়ে-
বেস জাম্পিং খেলাকে ধরা হয় বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বিপদজনক খেলা হিসেবে। এই খেলাতে মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশী। এই খেলাটি করা হয় ঠিক এভাবে। বড় বা অনেক উঁচু কোন পাহাড়ের চুরাই উঠে নিচে লাফ দিয়ে পরা আর মাটিতে নামার সময় প্যারাসুট ব্যাবহার করার নিচে নামা। খেলাটি ঠিক প্যারাসুট জাম্পিংয়ের মতো। তবে প্যারাসুট জাম্পিং করার সময় ইচ্ছা মতো উচ্চতা নির্ধারণ করে নেয়া যায় এবং সেখানে মাটিতে পরার মতো যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় বলে দুর্ঘটনা অনেক কম ঘটে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি ৬০ টি বেস জাম্পিং দেবার সময় একটিতে দুর্ঘটনা ঘটে এবং সেখানে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটে থাকে। তবুও অ্যাডভেঞ্চার প্রেমী মানুষেরা কি আর থেমে থাকে। তাঁরা ঠিকই লাফ দেয় কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে। নরওয়ে কে বেস জাম্পিংয়ের জন্য সবচেয়ে উত্তম দেশ বলা হয়ে থাকে কারন সেখানে আছে সুন্দর সবুজে ঘেরা উঁচু উঁচু পাহাড়।
ফ্রি হ্যান্ড ক্লাইম্বিং বা খালি হাতে পাহাড় বেয়ে ওঠা-
এই খেলাটি করতে হলে আপনাকে খালি হাতে পাহাড় বেয়ে উঠতে হবে যেটি আপনাকে একেবারে মৃত্যুর মুখোমুখি করতে পারে। সবাই অনেক সাহস দেখিয়ে পাহারে এমন খালি হাতে পাহারে ওঠা শুরু করে অনেকেই বেঁছে জান নিচে পানি থাকার দরুন কিন্তু যারা প্রশিক্ষন প্রাপ্ত নয় এবং সাহস দেখিয়ে খাঁড়া পাহাড় বেয়ে ওঠার চেষ্টা করে তাদের পরিনতি খুব খারাপ হয়ে থাকে। প্রতি বছর এই খেলাটি করতে জেয়ে অনেকই তাদের প্রান হারান।
কেভ ডাইভিং খেলাটা ঠিক এমন যেখানে আপনাকে পাহাড়ের নিচে অন্ধকার পানির মধ্যে সাঁতার কেটে সামনে আগাতে হবে। অনেকেরই কাছে এটি একটি রোমাঞ্চকর খেলা। চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা ঘুটঘুটে অন্ধকার তারমদ্ধে দিয়ে বন্ধুদের সাথে নিয়ে সাঁতার কেটে এগিয়ে যাওয়া সত্যি চরম এক অনুভুতি। খেলাটি প্রথম শুরু হয়েছিল ১৯৩৬ সালের দিকে অ্যামেরিকাতে। আর এটির জনক জ্যাক শেফার্ড কেভ। তখনকার সময় এই খেলাটি শুধু পর্যটকদের ভেতরে ছিল কিন্তু বর্তমানে কয়েক বছর ধরে এটি সবার কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু সর্বোপরি এই খেলাটিও কোনরকম বিপদ থেকে দূরে না কারন এখানে পথভ্রষ্ট হয়ে এবং লোকানো পাহাড়ের খণ্ডের সাথে ধাক্কা খেয়ে অনেকেই আহত হয়েছে।
একটি হেলিকাপ্টার আপনাকে বরফে ধাকা কোন পাহাড়ের চুরাই নিয়ে গেলো তারপর সেখান থেকে নিচে লাফ দিয়ে পাহাড়ের চুরাই নামতে হবে এবং স্কি করতে করতে পাহাড় বেয়ে নিচে নেমে আসতে হবে। কথা গুলো শুনতে খুব মজার মনে হলেও বাস্তবে কিন্তু ঠিক এমন কিছু হয়না। আপনি যদি অভিজ্ঞ না হন তবে আপনার মৃত্যু বা বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটবে এটি নিশ্চিত। আপনি যত উঁচু পাহাড় নির্বাচন করতে পারবেন ততবেশি রোমাঞ্চকর পরিস্থিতির স্বাদ নিতে পারবেন। পরিসংখ্যান হিসেব করলে দেখা যাবে যে প্রতি বছরই অনেক হেলি স্কিং ড্রাইভার দের মৃত্যু হয় পাহাড় ধশে পরার কারনে। পাহাড়ের গায়ে যে বরফ থাকে সেটি অনেক সময় আলগা অবস্থাই থাকে ফলে হেলিকাপ্টার থেকে সেটি বোঝা যায়না। অনেকেই না বুঝে ঝাপ দেয় ফলাফল তাদের নির্মম ভাবে বরফের নিচে চাপা পড়তে হয় এবং কপাল খারাপ হলে প্রান হারাতে হয়।
পাগলা ষাঁড়ের পীঠে বশে তাকে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়ানোর নাম বুল রাইডিং। উত্তেজনা পূর্ণ খেলার মধ্যে এটিকে সবার আগে রাখা হয়। খেলাটির নিয়ম ঠিক এমন যে আপনাকে একটি পাগলা ষাঁড়ের পীঠে বসিয়ে দেয়া হবে। আপনি ষাঁড়ের পীঠে বসা মাত্রই সে লাফালাফি শুরু করবে ও আপনাকে তার ওপর থেকে নিচে নামিয়ে দেবার চেষ্টা করবে। খেলার নিয়ম আনুজাই আপনাকে ন্যূনতম ৮ সেকেন্ড বশে থাকতে হবে। কথা শুনে খুব সহজ মনে হলেও বাস্তবে কিন্তু এতো সোজা না। এখন পর্যন্ত এমন করতে যেয়ে অনেক বুল রাইডার মারাত্মক ভাবে জখম হয়েছে। বেশীর ভাগ সময় ষাঁড়ের পীঠ থেকে নিচে পরে যাবার পরে তার লাথি সহ পায়ের ক্ষুরের আঘাত পেতে হয়।
এটি প্রাই সবারই অন্যতম একটি পছন্দের খেলা, সত্যি বলতে আমার নিজেরও এই খেলাটি অনেক পছন্দের। সমুদ্রের বড় বড় ঢেউ ওপর দিয়ে নিজের শরীর কে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া সত্যি অনেক রোমাঞ্চকর। সার্ফিং বর্তমানে বাংলাদেশে খুব বেশী জনপ্রিয় না হলেও বহির্বিশ্বে এই খেলাটির অনেক সুনাম বা চাহিদা আছে। অবকাশ যাপন করার জন্য খেলাটি অনেক পরিচিত। সমুদ্রে সৈকতে বেরাতে গেলে সার্ফিং না করে ফিরে আশা মানে আপনার ভ্রমণের সাধ অপরিপূর্ণ থকে যাওয়া। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে সার্ফিং এতোটাই জনপ্রিয় যে সেখানকার বাচ্চারা ছোটবেলা থেকে সার্ফিং করা শিখতে থাকে। বর্তমানে সার্ফিং পেশাদার খেলা হিসেবে ধরা হচ্ছে এবং বহির্বিশ্বে অনেক ধরনের টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে এই খেলাকে কেন্দ্র করে। তবে আপনার কাছে এই খেলাটি জতই মজার বা রোমাঞ্চকর মনে হোক না কেন বাস্তবে কিন্তু এতো সোজা না। প্রথম কথা আপনি যদি সাঁতার না জানেন তবে ভুল করেও এই খেলাটি করার চেষ্টা করবেন না। এটি খেলতে হলে আপনাকে জানতে হবে ভালো সাঁতার সাথে আপনাকে ভালো কোন ট্রেইনারের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। কারন আপনি যখন সমুদ্রের বড় বড় ঢেউয়ের ভেতর দিয়ে সার্ফিং করবেন তখন দুর্ঘটনা বসতো বা কোন কারনে সেই ঢেউ আপনাকে গ্রাশ করেও নিতে পারে। এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে অনেকেই পরেছে এবং এমনো হয়েছে যে তাঁরা প্রান নিয়ে আর ফিরে আসতে পারিনি। আর আপনারা তো জানেন যে সমুদ্রে থাকে কি বিশাল বিশাল হাঙ্গর মাছ একবার আপনাকে ধরতে পারলে তো আপনি জায়গাই শেষ।
সত্যি বলতে আমাদের দেশের মুরুব্বীরা জতই জ্ঞান দিক আমার কিন্তু এই উদ্ভট খেলা গুলা খুব বেশী ভালো লাগে। আর রিস্ক না নিলে কি কোন খেলা করে মজা আছে। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে অন্যান্য খেলার মতো এই খেলাগুলোতে বিরক্ত হবার মতো কোন চাঞ্চ নেই। সত্যি বলতে যদি আমার কোন সুজক থাকতো তবে আমি এই খেলাগুলা ট্রাই করতাম।
লিখাটি পূর্বে এখানে পোষ্ট হয়েছে। নতুন নতুন সব খবর জানতে ঘুরে আসতে পারেন আমাদের ব্লগ থেকে।