নিয়মিত একটা নির্দিষ্ট সময় মেনে খাওয়াদাওয়া করলে আপনার খাদ্যভ্যাস চলে আসবে শৃঙ্খলার মধ্যে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখা হয়ে উঠবে অনেক সহজ। বর্তমান সময়ে আমাদের বিভিন্ন রকম অসুস্থতার মূল কারণই হলো খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম। দিনে ঠিক সময়ে পেটপুরে খাওয়ার বদলে আমরা যখন তখন ফাস্টফুড এবং স্ন্যাক্স খেয়ে ক্ষুধা কমিয়ে রাখছি বটে কিন্তু এতে আমাদের অপকার বই উপকার হচ্ছে না।
সময়মত খাওয়ার উপকারিতা
খাওয়ার জন্য একটা সময় নির্দিষ্ট করে নেবার যেসব উপকারিতা আছে তার মধ্যে একটি হলো শক্তি সরবরাহ। অসময়ে খাওয়া বা না খেয়ে অনেকক্ষণ থাকার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। সময়মত খাবার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক থাকে, ক্ষুধার ফলে তৈরি হওয়া মাথাব্যাথা এবং ক্লান্তি দূর করে। আর যদি নির্দিষ্ট একটা সময়ে খাওয়াদাওয়া করা হয় তাহলে আর অতিরিক্ত স্ন্যাকস খেতে ইচ্ছে করে না, ফলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা কমে যায়। ওজন কমানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ে কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। দিনে কয়বার এবং কোন কোন সময়ে খাদ্য গ্রহণ করলে আপনার শরীর ভালো থাকবে তার একটি তালিকা দেখে নিন।
সকাল ৮টার দিকে সকালের নাস্তা
ঘুম থেকে ওঠার আধাঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে নাস্তা করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের পর রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায় যা নাস্তা খাবার ফলে আবার ঠিক হয়ে যায়। আর তাছাড়া দিন শুরু করার জন্য যথেষ্ট শক্তিরও দরকার হয় সকালেই। পূর্ণশস্য সিরিয়াল, লাল চাল, ফল এবং সবজি রাখুন আপনার নাস্তার মেনুতে।
দুপুর ১২টার দিকে দুপুরের খাবার
সকালের নাস্তার তিন থেকে চার ঘণ্টা পর দুপুরের খাবার খেতে পারেন। দুপুরের সময়টাতে সবাই খুব ব্যস্ত থাকে, তাই এ সময়ে খাবার ফলে শরীর এসব কাজ সামলানোর শক্তি পাবে। আর ব্যস্ততার জন্য খাবার না খেলে দেখবেন শরীর ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়ছে। এ সময়ে খাবারের তালিকায় রাখুন শর্করা, আমিষ, উপকারী চর্বি এবং আঁশযুক্ত খাবার। একবাটি সবজি বা সালাদ, মাছ অথবা মাংস, সুপ, রুটি ইত্যাদি খেতে পারেন।
হালকা নাস্তা দুপুর ৩টা/৪টার দিকে
সকালের বা দুপুরের খাবারের মতো অতটা ভারী খাবার খাওয়ার দরকার নেই এই সময়ে। কিন্তু এ সময়ে যে হালকা খিদে লাগে সেটাকে কমাতে তো হবে। ফলের সালাদ, জুস ইত্যাদি এ সময়ে আপনার কাজে লাগতে পারে। ফলে যেহেতু রয়েছে অনেকটা ভিটামিন এবং মিনারেল কিন্তু কম ক্যালোরি, তাই এ সময়ে এগুলো খেতে কোনও সমস্যাই নেই।
রাতের খাবার ৭টার দিকে
বিকেলের খাবারের দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরে রাতের খাবার খেতে হবে। দুপুরের খাবারের মতই রাতের খাবারেও রাখতে পারেন শর্করা এবং আমিষ। ডেসার্ট হিসেবে প্রচুর চিনিযুক্ত মিষ্টি না খেয়ে ফল খেতে পারেন। একটু তাড়াতাড়ি রাতের খাওয়াটা সেরে ফেলাই ভালো কারণ যত রাত হবে আপনার হজমের ক্ষমতা ততই কমতে থাকবে।
মাঝরাতের নাস্তা
অনেক রাত করে যারা জেগে থাকেন তাদের মাঝরাতের দিকে খিদে পাওয়াটাই স্বাভাবিক। এ সময়ে চিপস, বিস্কুট বা চকলেট খেয়ে খিদে কমিয়ে রাখার বদলে ফল বা সবজি জাতীয় কিছু খান। আর এটা খেয়াল রাখুন যে আপনি ঘুমোতে যাবার কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগেই সব খাওয়া দাওয়ার পাট চুকিয়ে ফেলা উত্তম।
মন্তব্য করুন