ভিটামিন শরীরের জন্য ভালো – এটা সবাই জানে। কিন্তু এর আবার মন্দ দিক? হ্যাঁ, সেটাও আছে বৈ কি! ভিটামিন খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আজকাল অনেকেই বেশ সচেতন। আসলে অধিকাংশ প্রকৃতিজাত খাদ্যবস্তুকে আমরা নানাভাবে শোধিত বা process করে, সংরক্ষণের জন্য জীবাণুনাশক রাসায়নিক পদার্থ যোগ করে, খাদ্যগত স্বাভাবিক ভিটামিনগুলোকে বহুলাংশে নষ্ট করে ফেলি। এ কারণেই ক্ষতিপূরণ হিসেবে অনেক সময় ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু ক্ষতিপূরণের চিন্তায় না গিয়ে শুধু স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে ভেবে আজকাল অনেকেই সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ভিটামিন খান মুড়ি-মুড়কির মতো করে। বিশেষ করে বি, সি এবং ই – এসব ভিটামিনগুলো। কিন্তু দেহের ভিটামিনের চাহিদা মেটানোর ব্যবস্থা করা উচিত খাদ্যের মাধ্যমে, ‘ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট’ গ্রহণের মাধ্যমে নয়। কেননা এতে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হয়।
ভিটামিন বি
ভিটামিন সি
মানুষ নিজদেহে ভিটামিন সি তৈরি করতে পারে না। তাই আলাদাভাবে এই ভিটামিন সি গ্রহণের প্রয়োজন হয়। এটা জেনে অনেকে ভাবেন যে শুধু খাদ্যের মাধ্যমে নয়, সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও প্রচুর পরিমাণে বাড়তি ভিটামিন সি খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু ভিটামিন সি-এর দৈনিক প্রয়োজন যা তা ১ টুকরো পেয়ারা বা ১টি লেবু অথবা ২টি টমেটো কিংবা ১টা বড় কমলালেবু থেকেই পাওয়া যেতে পারে।
অতিরিক্ত সিন্থেটিক ভিটামিন সি খাওয়া আবার স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক। কারণ এতে নষ্ট হয়ে যায় শরীরে অন্যান্য ভিটামিন এবং খনিজ লবণের ভারসাম্য। তাছাড়া সিন্থেটিক ভিটামিন সি দীর্ঘদিন গ্রহণ করলে দেখা দিতে পারে স্কার্ভি রোগ, মেয়েদের অকাল রজঃস্রাব এবং অনেক ক্ষেত্রে বাতের আক্রমণ।
ভিটামিন সি ঠাণ্ডা লাগা প্রতিরোধ করতে পারে, এমনকি ঠাণ্ডা লেগে গেলে তার স্থায়িত্বের সময়ও কমিয়ে দিতে পারে। কিন্তু প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি-তেই এ কাজ সম্ভব। তাই যাদের খাদ্যে ভিটামিন সি-এর মারাত্মক অভাব তারা ওই ১০০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম সিন্থেটিক ভিটামিন সি খেতে পারেন। কিন্তু এজন্য একবারে একগাদা ভিটামিন সি খাওয়া কোনোমতেই ঠিক নয়।
ভিটামিন ই
ভিটামিন ই পাওয়া যায় প্রচলিত সবরকম খাদ্যে। বিশেষ করে শস্যদানা এবং শাকপাতায়। বিজ্ঞাপনে বিশ্বাস করে অনেকেই মনে করেন যে, সিন্থেটিক ভিটামিন ই যৌনশক্তি বাড়িয়ে দেয়, জরা প্রতিরোধ করে এবং হৃদরোগ হতে দেয় না। এগুলোর সত্যতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে যথেষ্টই। প্রকৃতপক্ষে ভিটামিন ই-এর অভাব ঘটেছে এরকম রোগীর খবর নেই বললেই চলে। কারণ একে তো এই ভিটামিন সাধারণ খাদ্যের মধ্যে যথেষ্টই আছে, তাছাড়া আমাদের দেহে এই ভিটামিন সঞ্চিতও থাকতে পারে দীর্ঘদিন ধরে।
মন্তব্য করুন