এপেন্ডিক্স হচ্ছে একটি সরু টিউব আকৃতির থলি যা বৃহদান্ত্রের বাইরের প্রলম্ববিত অংশ। এটি ৬ ইঞ্চি লম্বা এবং পেটের নিচের দিকে ডান পাশে অবস্থিত। আপনার বেঁচে থাকার জন্য এপেন্ডিক্সের কোনই কার্যকারিতা নেই। যখন এপেন্ডিক্স ইনফেকশনে আক্রান্ত হয় ও ফুলে যায় তখন তাকে এপেন্ডিসাইটিস বলে। এপেন্ডিসাইটিস হওয়ার কারণ সব সময় বোঝা যায়না। এপেন্ডিক্স নামক উপাঙ্গটি যদি মিউকাস, পরজীবী অথবা মল দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে যায় তখন খুব যন্ত্রণা হয়। উদ্দীপ্ত এপেন্ডিক্সের ভেতরে ব্যাকটেরিয়া খুব দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি করে। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা না হয় তাহলে এটি বিস্ফোরিত হতে পারে। এর ফলে পুঁজ বের হয়ে এর আশেপাশের সব স্থানে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে যেতে পারে যা হতে পারে জীবন সংশয়কারী। জন্স হপকিন্স মেডিসিন এর মতে, এপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণের সূত্রপাত হওয়ার ৪৮-৭২ ঘন্টার মধ্যে ব্রাস্ট হতে পারে। তাই আসুন জেনে নিই এপেন্ডিসাইটিসের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে।
১। পেটে ব্যথা এপেন্ডিসাটিসের ব্যথা প্রায়ই পেটের ডান পাশে উৎপন্ন হয়। সাধারণত নাভির কাছাকাছি অংশে অস্বস্তি হয়। যা আস্তে আস্তে পেটের নীচের অংশে যেতে থাকে। শিশু এবং গর্ভবতী মহিলাদের পেটের বিভিন্ন স্থানে বা পাশে ব্যথা হতে দেখা যায়। ব্যথার অবস্থা খারাপ হয় পা বা পেটের নাড়াচাড়ার সময়, হাঁচি বা কাশি দিলে, ঝাঁকুনি খেলে যেমন- অসমান রাস্তায় গাড়ী চালানোর সময়।
২। পেট ফুলে যাওয়া তীক্ষ্ণ ব্যথার সাথে সাথে যদি পেট ফুলে যায় তাহলে সেটা এপেন্ডিসাইটিসের কারণে হতে পারে।
৩। বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া যদিও বমি বমি ভাব অনেক রোগেরই লক্ষণ হতে পারে। তথাপি যদি বমি বমি ভাবের সাথে পেটে ব্যথা হয় ও সাথে সাথে বমিও হয় এবং কিছু সময় পর যদি প্রশমিত না হয় তাহলে তা এপেন্ডিসাইটিসকেই নির্দেশ করে।
৪। ক্ষুধামন্দা খাবারের প্রতি অনীহা অথবা ক্ষুধা না লাগাও এপেন্ডিসাইটিসের একটি লক্ষণ।
৫। পরিপাকের সমস্যা এপেন্ডিসাইটিস হলে হজমের সমস্যা হতে দেখা যায় যেমন- ডায়রিয়া হতে পারে অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
৬। হালকা জ্বর এপেন্ডিসাইটিসের ফলে নিম্নমাত্রার জ্বর হতে পারে যা ১০০ ডিগ্রী ফারেনহাইটের নীচে থাকে। আবার শরীর ঠাণ্ডাও হয়ে যেতে পারে। যদি এপেন্ডিক্স ব্রাস্ট হয় তাহলে জ্বর বৃদ্ধি পায়।
উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। ব্লাড টেস্ট, আল্ট্রাসনোগ্রাম ও ইউরিন টেস্টের মাধ্যমে এপেন্ডিসাইটিস নির্ণয় করা যায়। পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে আপনার ডাক্তার সিদ্ধান্ত নেবেন জরুরী ভিত্তিতে অপারেশনের প্রয়োজন আছে কিনা। লেপ্রোস্কপি বা এপেন্ডেকটমি সার্জারির মাধ্যমে এপেন্ডিসাইটিস অপসারণ করা হয়। ১৫-৩০ বছর বয়সের মানুষের এপেন্ডিসাইটিস হতে দেখা যায়। মহিলাদের চেয়ে পুরুষের ক্ষেত্রে এপেন্ডিসাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
মন্তব্য করুন