নতুন পোশাকের একটা আলাদা চাকচিক্য থাকে। পোশাক ধোয়ার পর এর নতুন ভাবটি চলে যায় বলে আমরা অনেকেই না ধুয়ে কিছুদিন ব্যবহার করি পোশাকটি। কিন্তু এই কাজটি কি আসলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ?
লিন্ডসে বর্ডন এমডি, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের একজন ডার্মাটলজিস্ট সেলফকে জানান তিনি দোকান থেকে বা অনলাইন থেকে কেনা সব পোশাক ধুয়ে তারপর ব্যবহার করেন। পোশাকে অন্য মানুষের শরীর থেকে আসা জীবাণু নিয়ে তার বেশী মাথাব্যথা নেই। তিনি পোশাক ধুয়ে পরেন কারণ কাপড়টিতে থাকতে পারে বিভিন্ন ধরণের ডাই ও ক্যামিক্যাল। এগুলো স্পর্শকাতর ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
পোশাক যখন আমদানি বা রপ্তানি করা হয় তখন এতে কিছু প্রিজারভেটিভ দেওয়া হতে পারে, যেন এতে ছত্রাক না জন্মে। এগুলোতে থাকতে পারে ফর্মালডিহাইডের মতো রাসায়নিক। ফরমালডিহাইড থেকে হতে পারে ত্বকের র্যাশ। কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস এবং ইরিট্যান্ট কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস দুইটিই হতে পারে এই রাসায়নিকের কারণে। তবে পোশাক পরার আগে ধুয়ে নিলে এই সমস্যা হয় না। ধুয়ে নেওয়ার ফলে আরও কিছু ক্ষতিকর পদার্থ দূর হয়, যেমন ডাই। ব্লু ডাই কিছু মানুষের ত্বকে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। দুইবার ধুয়ে নিলে অতিরিক্ত ব্লু ডাই দূর হয় এবং ত্বকের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা কমে।
এ তো গেল রাসায়নিকের কথা। কিন্তু পোশাক থেকে আমাদের শরীরে কোনো জীবাণু আসার সম্ভাবনা আছে কি? উইল কার্বি এমডি, ক্যালিফোর্নিয়ার হার্মোসা বীচের একজন ডার্মাটোলজিস্ট জানান এমনটা হওয়া অসম্ভব না হলেও খুবই কম সম্ভাবনা আছে এর। কারণ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ফাঙ্গাসের রোগ সৃষ্টিকারী কোষ কাপড়ের মাধ্যমে সাধারণত ছড়ায় না।
ডঃ বর্ডন জানান পোশাকের মাধ্যমে স্ক্যাবিস ছড়াতে পারে, কিন্তু এর ঝুঁকিও অনেক কম। আপনি যদি পোশাকের দোকানে অন্তর্বাস ট্রায়াল দেন তাহলে এটা অন্য কোনো কাপড়ের উপর দিয়ে পরা এবং কেনার পর ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ব্যবহার করাটা আসলেই জরুরী। কারণ অ্যানাল এবং ভ্যাজাইনাল ত্বকের মাধ্যমে জীবাণু ছড়ানোর মাত্রা বেশী।
সুতরাং নতুন পোশাক ধুয়ে ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের সমস্যা হবার সম্ভাবনা কমে যায়, বিশেষ করে আপনার ত্বক যদি সংবেদনশীল হয়। তবে নতুন কাপড় থেকে জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
মন্তব্য করুন