“বিদ্যুৎ” নামটা খুব ছোট্ট দেখালেও আমাদের জীবনে এর প্রভাব ব্যাপক। বিদ্যুৎ ছাড়া যে একটা সেকেন্ডও থাকা সম্ভব না সেটা কিছুদিন আগে আমরা হারে হারে টের পেয়ছি যখন সারাদেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় হলো। কেমন হবে যদি এই অতি প্রয়োজনীয় জিনিস গাছে ধরে? কি কথা টা সুনতে উদ্ভট মনে হচ্ছে না। হুম আপনার কাছে কথাটি যতই উদ্ভট মনে হোক না কেন বাস্তবে কিন্তু কথাটা একেবারে সত্যি। এবার এমন কিছুই করে দেখালো বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে একটি গাছ তৈরি করেছে যেটির নাম “উইন্ড ট্রি” বা “বায়ু গাছ” এটি আসলে একটি প্রটোটাইপ কৃত্রিম গাছ, যার একটি আপনার বাড়িতে বসানো হলে সেটি থেকেই পুরো বাড়ির বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব। এখন পর্যন্ত এমন আশার কথাই শোনাচ্ছেন তাঁরা। এই নতুন ধরনের “বায়ু গাছ” আবিষ্কার করেছে ফরাসি গবেষণা সংস্থা সিএনআরএসের একদল গবেষক।
ঠিক যেভাবে এই গাছ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে-
বায়ু গাছে প্লাস্টিকের পাতার মধ্যে বসানো থাকে টারবাইন। এই টারবাইন বাতাসে ঘুরে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে। এতে সূর্যের আলোর সাহায্যে কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং পানির রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি হয় গ্লুকোজ ও অক্সিজেন। এ দুটি উপাদান থেকে তৈরি হয় বিদ্যুৎ।
এই প্রক্রিয়ার জন্য আরও দরকার হবে একটি বায়োফুয়েল সেল তথা জৈবিক ব্যাটারি, যে ব্যাটারিকে বিজ্ঞানীরা একটি ক্যাকটাসের ভেতর প্রতিস্থাপন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সফল হয়েছেন। এর আগে একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে, কৃত্রিম উপায়ে বেশি পরিমাণে আলো নিক্ষেপ করার ফলে একটি বায়োফুয়েল সেল প্রতিবর্গসেন্টিমিটার ক্যাকটাস থেকে ৯ ওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পেরেছে। পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনে এই প্রযুক্তি একটি মাইল ফলক হতে পারে ভবিষ্যতে। এই প্রযুক্তির সাথে জরিত গবেষকেরা মনে করেন যে ভবিষ্যতে এটির আরো উন্নয়ন ঘটনানো সম্ভব।
ঠিক কতো টাকা খরচ হবে একটি সম্পূর্ণ গাছ তৈরি করতে-
গবেষকেরা বলছেন, এ গাছ তৈরিতে খরচ হবে মোট ২৩ হাজার ৫০০ পাউন্ডের মতো যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে ২৮ লাখ টাকার মতো হয়। এই গাছটি সাড়ে ৪ মাইল গতিতে বাতাস হলেই বিদ্যুৎ উত্পাদন করতে পারবে। বাড়ি, রাস্তার এলইডি বাতির বিদ্যুৎ জোগান দিতে এই কৃত্রিম গাছ ব্যবহার করা যাবে। এই প্রযুক্তিতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২০১৫ সাল নাগাদ বাজারজাত করা হতে পারে বলে শোণা যাচ্ছে।
লিখাটি পূর্বে এখানে পোষ্ট হয়েছে! সময় পেলে ঘুরে আসতে পারেন আমাদের বিজ্ঞান প্রযুক্তি ব্লগ থেকে !
মন্তব্য করুন