বডি-ব্যাগে পুরে ফেলা হয়েছে দেহ। কাগজ-কলমের কাজও শেষ। শুধু কফিনে ঢোকানো বাকি। হঠাৎই নড়ে উঠলেন ওয়াল্টার উইলিয়ামস!
হাওয়ার্ড পোর্টারের বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না এখনও। মরণের ও পারে পৌঁছে দেওয়াই তাদের প্রতিষ্ঠান পোর্টার এন্ড সনস ফিউনারেল হোম-এর কাজ। বুধবার হাসপাতাল থেকে ৭৪ বছরের ওয়াল্টারের মৃত্যু-সংবাদটা আসতেই তাই চলে গিয়েছিলেন। নিজেও গিয়ে নাড়ি টিপে দেখেন। অসাড় দেহ, কোনও স্পন্দন নেই। হাসপাতালের চিকিৎসকরাও সময়মতো ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছেন। অন্ত্যেষ্টিতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষ, নড়ে উঠল লাশ।
কোনও গল্পের চরিত্র নন ওয়াল্টার। ঘোর বাস্তব। মিসিসিপি-র হোমস কাউন্টির এই বাসিন্দার নাম তাই এখন সংবাদপত্রের শিরোনামে।
হাওয়ার্ডের আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানান, ব্যাগের মধ্যে যেন ছটফট করছে দেহটা। যেন লাথর পর লাথি মারছে কেউ। শ্বাস পড়ার হালকা শব্দটা নিঃস্তব্ধ ঘরে ক্রমশ প্রকট হয়ে উঠছিল। দেরি করেননি তিনি। তাড়াতাড়ি খবর দেন এম্বুল্যান্সে। ছুটে আসেন চিকিৎসকরাও। শুরু হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। একী! এই তো হৃৎপিণ্ডের ধুকপুকানি! স্তম্ভিত ডাক্তাররাও।
গত ১২ বছর ধরে এই কাজটাই করছেন হাওয়ার্ড। কত শত মানুষের শেষকৃত্য সেরেছেন। হাজারো দেহ ঘেঁটেছেন। কিন্তু এমন ঘটনা, এই প্রথম। সম্ভবত শেষও, বললেন তিনি। ডাক্তার নন হাওয়ার্ড। চিকিৎসাবিদ্যা ছিটেফোঁটাও নেই।
শুধু নাড়ি টিপে প্রাণ আছে কি না দেখতে জানেন। তার পেশায় সেটুকু হলেই চলে। জানালেন, ওয়াল্টারের নাড়ি টিপে দেখার সময় কোনও ভুল হয়নি তার। এ ব্যাপারে নিশ্চিত তিনি। হাওয়ার্ডের কথায়, বুকের নীচে হৃৎপিণ্ডটা যেন থেমে গিয়েছিল। বডি-ব্যাগে পুরতেই, ধাক্কা দিয়ে জেগে উঠল মরণ-ঘুম থেকে। তা ছাড়া আর কি কোনও ব্যাখ্যা হতে পারে? পুরোটাই মিরাকল।
কারণ যাই হোক, উল্লসিত ওয়াল্টারের পরিবার। ছেলেমেয়ের বক্তব্য, ঈশ্বরই ফিরিয়ে দিয়েছেন তাদের বাবাকে। ওয়াল্টারের ভাইপো জানালেন, বুধবার রাতে কাকার মৃত্যুসংবাদ পান। আর বৃহস্পতিবার কাকার ছেলে ফোন করে বললেন, এখনও মরেননি বাবা। ওয়াল্টার আরও কত দিন বাঁচবেন, তা নিয়ে ভাবতে রাজি নন পরিবারের কেউই। মৃত্যুর মুখ থেকে তিনি যে ফিরে এসেছেন, তাতেই তারা খুশি।
মন্তব্য করুন