আসুসের প্রচলিত এবং জনপ্রিয় গেমিং সিরিজগুলোর মধ্যে আছে তিনটি সিরিজ: টাফ, স্ট্রিক্স, এবং আর ও জি যেফাইরাস। প্রতিটি ডিভাইসের রয়েছে আলাদা ফিচার, আলাদা স্পেসিফিকেশন। ব্যবহারকারীর প্রয়োজন এবং বাজেট অনুসারে বেছে নিতে পারেন নিজের পছন্দের গেমিং ডিভাইস। আজকে আসুসের জনপ্রিয় কিছু গেমিং সিরিজ এবং মডেল সম্পর্কে আপনাদের কিছু ধারনা দেব,যাতে করে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। এছাড়াও আসুসের সকল গেমিং ল্যাপটপের বর্তমান বাজার মূল্য সম্পর্কে জানতে ভিজিট করতে পারেন: https://fourstaritbd.com/product-category/laptop/gaming-laptop/asus-gaming/
Asus Tuf gaming সিরিজঃ
প্রথমেই আমরা আসুসের অন্যতম সেরা আসুস টাফ গেমিং সিরিজ নিয়ে কথা বলব। এই সিরিজের মধ্যে রয়েছে বাজেট ফ্রেন্ডলি ল্যাপ্টপ, ASUS TUF F15 FX506LEB যেমন কোর আই ৫, ১০ম জেনারেশনের এই ডিভাইসটিতে রয়েছে ৮ জিবি র্যাম, ১৬।৫.৬ ইঞ্চির ডিস্প্লে, এফ এই ডি এর ১৯২০*১০৮০ রেজুলেশন। অতিরিক্ত ৮ জিবির র্যাম ব্যবহার করতে পারবেন। পাবেন ডেডিকেটেড NVIDIA GeForce GTX 1650 GDDR5 4GB গ্রাফিক্স কার্ড। এছাড়াও ব্যাকলিট কি বোর্ড, বিল্ট ইন স্পিকার-মাইক্রোফোন সহ সকল সুবিধা পাচ্ছেন বাজেটের মধ্যে। ২.২৩ কেজি ওজনের এই ডিভাইস কাজের উপর ভিত্তি করে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাক আপ দিতে পারে।
কোর আই ৫ এর অন্য আরেকটি টাফ সিরিজের, NVIDIA GeForce RTX 3050 Ti 4GB GDDR6 Laptop Graphics কার্ডের এই গেমিং ডিভাইস হল ASUS TUF F15 FX506HEB . ASUS TUF Gaming A15 FA506ICB এবং ASUS TUF Gaming A15 FA506IC হল এই সিরিজের রাইজেন মডেলের ডিভাইস। দুটো ডিভাইসে আধুনিক এবং উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ফিচার রয়েছে। একটু উচ্চক্ষমতার ডেস্কটপ তৈরি করতে আপনাকে যে বাজেট খরচ করতে হবে, তার কমেই পেয়ে যাবেন বহনযোগ্য আসুস গেমিং ডিভাইস। এছাড়াও কোর আই ৭ প্রসেসরের ও টাফ মডেলের ডিভাইস পেয়ে যাবেন।
Asus ROG সিরিজঃ:
আসুসের গেমিং সিরিজের নাম বললেই সবাই প্রথমে যে সিরিজের কথা বলে সেটা হল আসুস ROG series. এই আর ও জি এর মধ্যে ও কিছু পার্থক্য আছে। যেমন আর ও জি স্ট্রিক্স এবং আর ও জি জেফাইরাস।
আর ও জি জেফাইরাসের DUO 15 এর দাম প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা। Intel Core i9-10980HK Processor এর এই ডীভাইসের আছে ৩২ জিবি র্যাম, আছে এক্সট্রা স্লটের সুবিধা, ১ তেরা বাইট মেমরি সহ NVIDIA GeForce RTX 2080 SUPER 8GB GDDR6 VRAM Graphics (Boost Clock: 1330MHz, 90W) গ্রাফিক্স কার্ড দিবে অন্যরকম গেমিং অনুভূতি। তবে, র্যাম-রম-গ্রাফিক্স কার্ড থাকবার পরেও এটির ওজন মাত্র ২.৪ কেজি।
এর পর যে দুর্দান্ত গেমিং ডিভাইসের কথা বলব, সেটা হচ্ছে ASUS ROG STRIX G15 G513IM Ryzen 7। ১৬ জিবি র্যামের এই ডিভাইসের গ্রাফিক্স কার্ড হল NVIDIA GeForce RTX 3060 6GB। অডিও সিস্টেম হিসেবে রয়েছে Dolby Atmos, AI noise-canceling technology,Built-in array microphone, 2x 1.5W speaker। অন্য সকল ডিভাইসের মত নয়েজ ফ্রি এক্সপেরিয়েন্স পাবেন।
ব্যাকলিট কী বোর্ড, 200W AC Adapter এবং 56WHrs, 4S1P, 4-cell Li-ion এর এই ডিভাইস ব্যাটারি ব্যাক দিবে ৭ ঘন্টা পর্যন্ত।
ASUS ROG FLOW Z13 GZ301ZE 12th Gen Intel Core i9 নামের অত্যাধুনিক এই গেমিং ডিভাইসের স্টোরেজ ১ টেরাবাইট। একাধিক ইউ এস বি পোর্ট রয়েছে, কিন্তু এইচ ডি এম আই পোর্ট নেই। তবে এটির ওজন তুলনামূলক হালকা, ১.১৮ কেজি। এটিতে পাবেন 16GB র্যাম, সাথে এক্সট্রা র্যাম স্লট তবে এক্সট্রা কোন এস এস ডি স্লট নেই। এটিতে রয়েছে আর ও জি মোবাইল ইন্টারফেস, সাথে আছে মাইক্রো এস ডি কার্ড রিডার। এটির ডিস্প্লে মাত্র ১৩.৪ ইঞ্চি, আছে টাচ স্ক্রিন সুবিধা। এতে রয়েছে ন্যানো এজ এবং থিন বেজেল সুবিধা। ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ দুই ভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন।
অন্যান্যঃ
আসুসের রয়েছে একাধিক গেমিং ডিভাইস। যে কথা আমরা আগেই বলেছি। এখন আমরা Asus Vivobook Pro 16X OLED M7600QE । AMD Ryzen 9 5900HX এর সর্বাধুনিক এই গেমিং ল্যাপটপ এর ওজন মাত্র ১.৯৫ কেজি। এছাড়া রয়েছে NVIDIA GeForce RTX 3050Ti 4GB GDDR6 গ্রাফিক্স কার্ড, ওয়াই ফাই এবং ব্লুটুথের সাথে আছে স্পেশাল দিচার, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
প্রাইভেসি শাটারের সাথে আছে ৭২০পিক্সেলের ওয়েব ক্যাম, সহজেই লাইভ গেমিং করার জন্য পাবেন অসাধারন সাপোর্ট, এছাড়াও ভিডিও কনফারেন্স বা মিটিং এর জন্য এটি হবে দুর্দান্ত ডিভাইস। ব্যাকলিট কি বোর্ডের সাথে পাবেন 512GB M.2 NVMe PCIe 3.0 SSD, আছে 32GB DDR4 RAM। যদিও এই ডিভাইসে কোন অতিরক্ত ফিচার নেই তবুও এর সকল সুবিধার জন্য গেমাররা ওয়ি ডিভাইস ব্যবহার করতে বেশ স্বছন্দ্য বোধ করছেন। এটির ব্যাটারি ব্যাক আপ সর্বোচ্চ ৯ ঘন্টা থেকে ১১ ঘন্টা হতে পারে।
র্যাম-রম এবং প্রফেসসর ভেদে প্রতিটি গেমিং ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেমে পাবেন উইন্ডোজ ১০ অথবা ১১। ১ বছরের ব্যাটারি ওয়ারেন্টিসহ ২ বছরের অফিশিয়াল ওয়ারেন্টি রয়েছে প্রায় প্রতিটি ডিভাইসে।
ওয়াইফাই-ব্লুটুথ ড্রাইভারসহ, আছে ৭২০ পিক্সেলের ক্যামেরা। নয়েজ ফ্রি অডিও সিস্টেম আছে, আছে অডিও জ্যাক, ব্যাকলিট কী বোর্ড।
আসুসের গেমিং ডিভাইসে উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি, অত্যাধুনিক ফিচার এবং স্পেসিফিকেশন থাকার দরুন সবার নজর কেরেছে। এছাড়া ল্যাগ ফ্রি এবং রিফ্রেশ রেট বেশি হবার কারনে গেমার বা এনিমেটরদের জন্য কাজের সুবিধা হবে। এছাড়া যারা লাইভ গেমিং এ অংশ নেন, তাদের জন্য আসুসের যে কোন ডিভাইস হতে পারে সেরা বন্ধু।
তবে অনেকেই ব্যাটারি লাইফ নিয়ে দ্বিধায় থাকতে পারেন, কম-বেশি সাধারন ব্যবহারের উপর নির্ভর করে প্রতিটি ডিভাইস সর্বোচ্চ ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা কিংবা ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাক আপ দিতে পারবে। তবে হেভি গেমিং এর ক্ষেত্রে ব্যাটারি লাইফ আরো কমে যায়।
যারা গেমিং এর জন্য কিংবা এডিটিং এর জন্য এ ধরনের হেভি গেমিং ডিভাইস খুঁজছেন, তারা নির্দ্বিধায় আসুসের যে কোন ডিভাইস বেছে নিতে পারেন।
মন্তব্য করুন