বেশ কয়েকদিন আগে ঘটা করে ওয়ালটন লঞ্চ করলো দেশে উৎপাদিত ৬ জিবি র্যাম বিশিষ্ট স্মার্টফোন ওয়ালটন প্রিমো এক্স৫। দারুণ স্টাইলিশ এই স্মার্টফোনটির অন্যতম আকর্ষণ হলো ডিভাইসটির ডিজাইন। গ্লসি মেটাল ব্যাক ফিনিশিং, ডুয়াল রিয়্যার ক্যামেরা এবং উন্নত মানের হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন। ডুয়াল রিয়্যার ক্যামেরার পাশাপাশি আরো রয়েছে ৩৪৫০ মিলি এ্যম্পিয়ার ব্যাটারি, ৬৪ জিবি ইন্টারনাল মেমোরী কার্ড সহ আরো অনেক কিছু। চলুন বিলম্ব না করে শুরু করে দেই ওয়ালটন প্রিমো এক্স৫ এর বিস্তারিত হ্যান্ডস অন রিভিউ। ততক্ষন আমার সাথেই থাকুন।
আউট অব দ্য বক্স:
- প্রিমো এক্স৫ হ্যান্ডসেট
- টাইপ সি ইয়ার ফোন কনভার্টার
- ব্যাক কভার
- এক্সট্রা প্রোটেকশন পেপার
- অ্যাডাপটার
- ইউ.এস.বি কেবল
- ইয়ারফোন
- সিমকার্ড ইজেক্টর
- ওয়ারেন্টি কার্ড এবং সেফটি ইন্সট্রাকশন
ডিসপ্লে এবং টাচ
প্রিমো এক্স৫ এ রয়েছে ৫.৯৯ ইঞ্চি ফুল এইচ.ডি+ ফুল ভিউ ডিসপ্লে। ডিসপ্লে’র রেজুল্যুশন হলো ২১৬০*১০৮০ পিক্সেল। এছাড়া ডিভাইসটিতে আরো রয়েছে বর্তমান সময়ের ক্রেজ ১৮:৯ ডিসপ্লে আসপেক্ট রেশিও। ডিসপ্লে-তে ব্যবহার করা হয়েছে ২.৫ডি কার্ভড গ্লাস, যা ডিসপ্লের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহু গুন। ডিসপ্লের ডে-লাইট ভিজিবিলিটি বেশ ভালো। টাচ নিয়ে কোন প্রবলেম পাইনি।


ইউজার ইন্টারফেস
প্রিমো এক্স৫ এ অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে এ্যন্ড্রয়েড ৮.১.০ অপারেটিং সিস্টেম। ডিভাইসটির ইউজার ইন্টারফেস স্টক এ্যন্ড্রয়েড ৮.১.০ অরিও’র আদলেই অপটিমাইজ করা হয়েছে।


আউটলুক
প্রিমো এক্স৫ ডিভাইসটি মূলত গ্লসি প্লাষ্টিক এবং মেটাল দিয়ে তৈরী করা। প্রিমো এক্স৫ সম্পূর্ণ ডিভাইসটি মেটালএবং গ্লসি প্লাস্টিক এর মিশ্রণে প্রস্তুত করা। সি.এন.সি ডায়মন্ড কাট ফিনিশ হওয়ায় ডিভাইসটির লুক অনেক প্রিমিয়াম এবং হাতে নিলে একটা গ্র্যান্ড ভাব চলে আসে। ডিভাইসটির প্রস্থ্য ৭৪.৩ মিলিমিটার, দৈর্ঘ্য ১৫৯.৫৮ মিলিমিটার আর ডিভাইসটির পুরুত্ব মাত্র ৮.৪ মিলিমিটার। ব্যাটারি সহ এই ডিভাইসটির ওজন ১৬৬ গ্রাম মাত্র।


র্যাম এবং রম
ডিভাইসটিতে রয়েছে ৬ জিবি এল.পি.ডি.ডি.আর৪ এক্স র্যাম। এই র্যামের পারফরমেন্স অন্যান্য প্রচলিত র্যামের চেয়ে ৮০ ভাগ ফাস্টার। এছাড়া ইন্টারনাল মেমোরী রয়েছে ৬৪ জিবি যা ২৫৬ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যাবো।


সি.পি.ইউ এবং জি.পি.ইউ
প্রিমো এক্স৫ ডিভাইসটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ২ গিগাহার্টজ অক্টা-কোর প্রসেসর। এছাড়া গেমিং এবং ভিডিও’র জন্য রয়েছে ‘মালি জি-৭১’ জি.পি.ইউ। মাল্টি টাস্কিং এই ডিভাইসটি আপনাকে হতাশ করবেনা মোটেও।


বেঞ্চমার্ক
আমরা ডিভাইসটির বেঞ্চমার্ক টেষ্ট করেছি। ডিভাইসটির এ্যনটুটু এবং গিক বেঞ্চ স্কোর আপ টু দ্যা মার্ক বলা যায়। স্কোর গুলো দেখে নিন।


গেমিং
ডিভাইসটি-তে রয়েছে মালি জি-৭১ জি.পি.ইউ, ২ গিগাহার্টজ অক্টা-কোর প্রসেসর। যার ফলে ডিভাইসটি যে কোনো প্রকার গেমিং এর জন্য পারফেক্ট। প্রিমো এক্স৫ ডিভাইসটিতে পাবজি, নিড ফর স্পিড মোস্ট ওয়ান্টেড, এসফাল্ট ৯, কল অফ ডিউটি গেমস গুলো ইজিলি ল্যাগ ফ্রি খেলতে পেরেছি। কাজেই গেমিং নিয়ে কোন প্রকার টেনশনের কারণ নেই। আর হেব্বি গেমিং-এ ডিভাইসটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম মনে হয়নি।


ক্যামেরা
ডিভাইসটির রিয়ার প্যানেলে রয়েছে বি.এস.আই সেন্সর যুক্ত ১৩+৫ মেগাপিক্সেল ডুয়াল ক্যামেরা। ক্যামেরায় আরো রয়েছে পাওয়ারফুল এল.ই.ডি ফ্ল্যাশ লাইট। ডিভাইসটির রিয়্যার এবং ফ্রন্ট ক্যামেরা এ্যাপারচার এফ/২.০। ক্যামেরার স্পেশালিটির মধ্যে অন্যতম হলো সুপার ফাষ্ট অটো ফোকাস। রিয়্যার ক্যামেরা দিয়ে ফুল এইচ.ডি ভিডিও রেকর্ডিং করা যায়।


সেলফি তোলার জন্য রয়েছে ১৬মেগাপিক্সেল ক্যামেরা এবং সফ্ট ফ্ল্যাশ লাইট।


কানেক্টিভিটি
৪জি সাপোর্টেড প্রিমো এক্স৫- এ ২জি এবং ৩জিও সাপোর্ট করে। এছাড়া ডিভাইসটিতে রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটূথ ভার্সন ৪, ও.টি.জি এবং ডব্লিউ ল্যান হটস্পট সুবিধা।


মাল্টিমিডিয়া
ফুল এইচ.ডি ভিডিও রেকর্ডিং+প্লে-ব্যাক, ক্যাম কোর্ডার ছাড়াও আরো রয়েছে রেকর্ডিং সহ এফ.এম রেডিও সুবিধা। এছাড়া আরো রয়েছে হাই কোয়ালিটি অডিও সিস্টেম, লাউড সাউন্ড এবং ক্রিস্টাল ক্লিয়ার অডিও।


সিকিউরিটি
ফেইস আনলক থাকার কারণে ডিভাইসটির সিকিউরিটি অনেক টাইট। আর ১৬ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা থাকার ফলে ফেস আনলক খুব ভালভাবেই কাজ করে।


এছাড়া ব্যাক প্যানেলে রয়েছে ফাস্ট ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর। ওয়ালটনের দাবি অনুযায়ী আনলক রেসপন্স টাইম মাত্র ০.১ সেকেন্ড।


ব্যাটারি এবং ফাস্ট ডাটা ট্রান্সফার
প্রিমো এক্স৫ ডিভাইসটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৩৪৫০ মিলি এ্যম্পিয়ার ব্যাটারি। ফাষ্ট চার্জিং এর পাশাপাশি রয়েছে সুপার ফাস্ট ডাটা ট্রান্সফার সুবিধা। ফলে খুব ইজিলি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ থেকে পিসি/ল্যাপটপে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারবেন।


মূল্য:
প্রিমো এক্স৫ এর বাজার মূল্য রাখা হয়েছে ২৪,৯৯৯ টাক।
মন্তব্য:
বাজারে প্রচলিত অনেক স্মার্টফোনের ভিরে ওয়ালটন প্রিমো এক্স৫ নি:স্বন্দেহে একটি ইউনিক স্মার্টফোন। যাচাই করে দেখতে পারেন, কনফিগারেশন, দাম, ক্যামেরা কোয়ালিটি ডিজাইন সব দিক দিয়েই এই স্মার্টফোন-টি বাজারে প্রচলিত স্মার্টফোনের সাথে বেশ কম্পিটিটিভ।
মন্তব্য করুন