পেন ড্রাইভ ব্যবহারের পর সেটি পিসি থেকে একটানে খুলে ফেলা কি ঠিক? কিংবা পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলে কী কোনো সমস্যা হবে? এ জাতীয় নানা প্রশ্ন প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের মনে উদয় হয়।ফলে প্রশ্নগুলো অনেক সময় আমরা নিজেরাই করে থাকি
কিংবা অন্যেরা আমাদের করে থাকে। প্রযুক্তির এ জাতীয় কমন কিছু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদকন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখবেন কীভাবে?
যারা ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকেন তাদের একটি কমন চিন্তা হচ্ছে, ল্যাপটপের ব্যাটারি কীভাবে ভালো রাখবেন? এক্ষেত্রে কেউ বলে থাকেন, ব্যাটারি রিচার্জ করার আগে পুরো চার্জ শেষ করতে হবে আবার কেউবা বলে থাকেন চার্জ ৪০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে রেখেই চার্জ দিতে। ফলে ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখতে আসলেই কোনটা সঠিক, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়তে হয়।
তবে ব্যাটারির ক্ষেত্রে একটি ভালো বিষয় হচ্ছে, বর্তমানে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, বা আইফোনের ব্যাটারিগুলো সাধারণত লিথিয়াম আয়নের হয়ে থাকে। ফলে এ ব্যাটারিগুলোর যত্ন নেওয়া সহজ। ব্যাটারি ভালো রাখার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞতের মত হচ্ছে, ব্যাটারি অতিরিক্ত গরম হতে দেওয়া ঠিক নয়। ব্যাটারি ভালো রাখতে এর চার্জ ১০ শতাংশের নিচে নামানো উচিত না। এছাড়া ফুল চার্জ থাকলে প্লাগ ইন করে রাখাটাও উচিত নয়। তবে ল্যাপটপের ব্যাটারির আয়ু যেহেতু নির্দিষ্ট, তাই একটা সময়ের পর ব্যাটারির আয়ু কমাটাই স্বাভাবিক।
ভাইরাস, ট্রোজান বা ম্যালওয়্যার আসলে কী করে?
ভাইরাস ও ট্রোজান যে খারাপ কিছু, এটা সকলেরই জানা। কিন্তু অনেকেই জানেন না এগুলো কীভাবে কাজ করে। ভাইরাস হচ্ছে একটি প্রোগ্রাম, যেটি কম্পিউটারে নিজেদের কপি করে ফেলে এবং ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। বলা যায়, কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে সত্যিকারের জীবানুবাহী ভাইরাসের মতই, যা ছড়িয়ে পড়ে। আর কম্পিউটারের বিভিন্ন সাধারণ অ্যাপ্লিকেশনের মতো ট্রোজানও হচ্ছে একটি অ্যাপ্লিকেশন। কিন্তু এর ভেতরে গোপনে ক্ষতিকর কোড বসানো থাকে। ট্রোজানে আক্রান্ত পিসিটি অন্য ব্যবহারকারীদের হাতে পিসির নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়ে থাকে। ভাইরাস এবং ট্রোজান এবং ম্যালওয়্যার এড়াতে ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলে কী সমস্যা হবে?
ফ্রি ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের জন্য অনেকেরই আগ্রহ থাকে, পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারে। কিন্তু ব্যবহার করা নিরাপদ হবে কিনা, সে প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খায়। এক্ষেত্রে জেনে রাখা দরকার যে, পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহার আসলে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। নেটওয়ার্ক পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত থাকলেও অনেক সময়ই পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারে দেখা যায় যে, তথ্য প্রকাশ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এছাড়া ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড প্রকাশ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটে। তাই পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জরুরি। খুব বেশি লোকসমাগমের মধ্যে এক্ষেত্রে সেবাটি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
ইউএসবি ‘ইজেক্ট’ করাটা কী আসলেই প্রয়োজনীয়?
ইউএসবি ড্রাইভ ব্যবহারে তা নিরাপদভাবে খুলে ফেলতে কেন বলা হয়? এর কারণ হচ্ছে, ড্রাইভে কোনো কিছু কপি করা হলে অনেক সময় এটি কাজ শেষ হয়েছে দেখায় কিন্তু আসলে ড্রাইভ আরো কিছু কাজ এসময় করতে থাকে। ফলে ইজেক্ট করা হলে ড্রাইভের লাইনে থাকা অন্যান্য কাজ শেষ হিসেবে নিশ্চিত করে নেয়। আর তাই কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থেকে ইউএসবি ড্রাইভ ব্যবহারের শেষে একটানে খুলে ফেলাটা ঠিক নয়।
ই-মেইলটি আসলে স্প্যাম কিনা বুঝব কীভাবে?
স্প্যাম মেইলগুলোতে সাধারণত ‘টাকা হারিয়ে গেছে, সাহায্য করুন’ কিংবা ‘লটারি জিতেছেন’ এ জাতীয় প্রতারণামূলক অফার থাকে। এছাড়া অনেক স্প্যাম মেইলে বিভিন্ন লিংক দেওয়া থাকে যেগুলোতে ক্লিক করলে আপনাকে ভাইরাসপূর্ণ সাইটে নিয়ে যেতে পারে কিংবা নানা কায়দা করে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে। মেইলে স্প্যাম চিহ্নিত ব্যবস্থা থাকলেও, অনেক সময় সে ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে স্প্যাম মেইলটি ইনবক্সে চলে আসে। তাই অপরিচিত উৎস থেকে আসা ইমেইল না পড়াটাই নিরাপদ।
রাউটার রিসেট করাটা প্রয়োজনীয় কেন?
রাউটার ব্যবহারকারীদের যে কথাটা বরাবরই বলতে শোনা যায় তা হচ্ছে, ইন্টারনেটের সংকেত না আসায় রাউটারটির সংযোগ খুলে আবার সংযোগ লাগালে দেখা যায় ম্যাজিকের মতো রাউটারটি পুণরায় কাজ করছে। নানা কারণে এটি হতে পারে। যেমন: রাউটার অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে, বিট টরেন্টের অতিরিক্ত ব্যবহারে কিংবা নিম্নমানের রাউটারের দরুন। রাউটার নিয়মিত রিসেট করা হলে ভালো থাকে।
ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস কতটা নিরাপদ?
বিনামূল্যের অ্যান্টিভাইরাস আসলে অনেকটা নাই মামার চেয়ে কানা মামার মতো। পিসির সর্বোত্তম নিরাপত্তায় লাইসেন্সকৃত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করাটাই যুক্তিসঙ্গত। আর বিনা মূল্যের অ্যান্টিভাইরাস সর্বোত্তম না হলেও উত্তম তো বটেই। আর ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস হিসেবে অ্যাভিজির ব্যবহার অনেকাংশেই নিরাপদ।
মন্তব্য করুন